Site icon গল্প

গল্প : আলাপ

‘তোমরা বান্ধবীরা মিলে কোথাও ঘুরতেও তো যেতে পারো। চাকরি থেকে ছুটি নাও কদিনের।’

জানালার কপাট খুলে গোলগাল চাঁদটাকে দেখতে দেখতে বলল সুজন। রেনু চোখ বুঁজে আছে।

‘তোমার কারণেই তো যেতে পারি না।’ মৃদু অনুযোগ। তবে ভিত্তিহীন।

‘তোমার বান্ধবীরা তো বেশ ঘুরছে। একজন আছে না, কী যেন নাম তার।’

‘মিথিলার কথা বলছো?’

‘হুম।’

‘ও তো দুর্ধর্ষ। পাহাড়পর্বতে চড়ে বেড়ায়। টাকার অভাব নেই।’

চাঁদের আলো মুখে মেখে নিচ্ছে সুজন। নড়ে উঠল রেনু। কাটিয়ে নিল আড়ষ্টতা।

‘হুমম। এ জন্যই এমন ফিগার ধরে রাখতে পেরেছে। তুমিও ওর সঙ্গে পাহাড়ে চড়তে শুরু করে দাও না কেন।’

‘কেন? শায়লার ফিগার কি খারাপ নাকি! ও তো পাহাড়ের ধারে কাছেও যায় না।’

‘খোঁজ নিয়ে দেখো, ঠিকই ইয়োগা করছে।’

বলতে বলতেই রেনুর আঙুলের ফাঁকে নিজের আঙুলগুলোর জায়গা করে নিল সুজন। আজকের চাঁদটা বেশ বড়। আকাশটাও বারবার ফুলেফেঁপে উঠছে, চাঁদের খাতিরে।

‘হুম। করতে পারে, তোমার ওই বন্ধুটার মতো। আশরাফ ভাই। তবে উনাকে দেখে মনে হয় না জিমে যায়। ওই রকম সিক্স প্যাক তো দেখা যায় না।’

‘সারাদিন রাস্তাঘাটে ঘুড়ে বেড়ায়। গাধার খাটনি খাটে। ওর আবার জিম লাগে!’

‘আশরাফ ভাই পাত্রী দেখতে বলেছে। বিয়ের শখ হয়েছে নাকি।’

‘মিথিলাকেই বলো না কেন। ওর সঙ্গে মানাবে না?’

‘হুম। তা মানাতে পারে বটে। তবে মিথিলা সম্ভবত রাজি হবে না। ওর আবার এমন তাগড়াটে যুবক পছন্দ না।’

‘যুবক না ছাই। ও ব্যাটা তো বয়সে আমার চেয়েও বড়।’

উপত্যকা ধরে এগিয়ে যেতে লাগল সুজন। রেনুর তরফ থেকে শক্ত হলো আঙুলের বাঁধন। যেন এবার ঠিকঠাক আটকা পড়েছে তার স্বামী।

‘এমন আর কী বয়স। আর চল্লিশ পেরোলেই কি বিয়ে করা যায় না নাকি!’

‘মিথিলার কত হলো?’

‘পঁয়ত্রিশ হবে।’

দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে জানালার গ্রিল বেয়ে বয়ে চলা শ্বাসগুলো। মাটিতে আচমকা চেপে চেপে বসছে ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টি। বাষ্প হয়ে ওঠা উষ্ণতাগুলো দিশেহারা হয়ে পড়েছে।

‘ঘর সংসার করবে না মিথিলা?’

‘কে জানে! না করলে নেই।’

‘কেন, ওসবের কোনো ডিমান্ড নেই বুঝি?’

‘থাকলে থাকবে? কেন তোমার আশরাফ ভাইয়ের নেই? খুব যে আমার বান্ধবীর পেছনে পড়েছো?’

‘আশরাফের তো আছেই।’

‘থাকবে না কেন! অমন…।’

কথাটা মাঝপথে অনুচ্চারিত ধ্বণি হয়ে হারিয়ে গেল কোনো এক ফাঁকে। তারপর আবার ফিরে এলো পুরনো শব্দের নতুন বাক্য হয়ে হয়ে।

‘আশরাফ ভাইকে একদিন বাসায় দাওয়াত করো না।’

‘কেন, মিথিলাও আসবে নাকি?’

‘হুমম।’

‘হুমম। তাহলে বলা যায়।’

‘কবে আসবে শুনি?’

‘কবে বলবো?’

‘কালই বলো।’

‘মিথিলা ঢাকায়?’

‘হুমম।’

‘ও পারবে আসতে?’

‘বলে দেখবো। আমার তো মনে হয়…।’

‘ও আসুক।’

‘আর আশরাফ ভাই?’

‘হুঁ।’

মধ্যরাত পেরিয়েছে যেন সে-ই কবে। টানটান চাঁদ হুটহাট ঢেকে যাচ্ছে মেঘের আড়ালে। শহুরে নিরবতার মাঝে ছলকে ওঠে অদৃশ্য পুকুরের মাছগুলো। ঝিরি ঝিরি বৃষ্টি কোনো এক ফাঁকে রূপ নিয়েছে প্রবল বর্ষণে। চাঁদটাকে কে যেন হঠাৎ উল্টে দিল। বেরিয়ে এলো চাঁদের অন্ধকার দিক। সেখানে বার বার প্রতিধ্বণিত হচ্ছে দুটো নাম।

‘আশরাফ!’

‘মিথিলা!’

poem অতিপ্রাকৃত গল্প আব্দুস সাত্তার সুমন আলমগীর কবির আসাদুজ্জামান খান মুকুল ঈদ উজ্জ্বল রায় উপন্যাস এম. আব্দুল হালীম বাচ্চু কবিতা কবির কাঞ্চন কিশোর গল্প গল্প ছোটগল্প ছড়া থ্রিলার ধ্রুব নীল নারী নারী নির্যাতন পরাবাস্তব গল্প প্রাপ্তবয়স্ক প্রাপ্তবয়স্কদের গল্প প্রেমের গল্প ফারুক আহম্মেদ জীবন বাবা বাবার গল্প বিবেক বিবেকের গল্প ভূতের গল্প মা মুহাম্মদ এলমুল বাহার মোঃ আশতাব হোসেন মোখলেছুর রহমান রকিবুল ইসলাম রম্য রম্য রচনা রহস্যজট রাকিবুল ইসলাম রোমান্টিক গল্প সাইকোথ্রিলার সামাজিক সামাজিক গল্প সায়েন্স ফিকশন হরর হরর গল্প

অনলাইনে ফ্রি বাংলা গল্প পড়তে আমাদের সঙ্গে থাকুন। প্রয়োজনে ওয়েবসাইট রিফ্রেশ করে সাইটের ‘বন্ধু’ হয়ে যান। সেক্ষেত্রে নতুন গল্প আপডেট হলেই শুধু নোটিফিকেশন পাবেন।

এ ওয়েবসাইটে নিয়মিত আপলোড হবে বাংলা রোমান্টিক গল্প, বাংলা হরর গল্প, থ্রিলার গল্প , অতিপ্রাকৃত গল্প এবং বাংলা সায়েন্স ফিকশন গল্প

Exit mobile version