Friday, July 4
Shadow

সায়েন্স ফিকশন

Bangla Science Fiction stories.

বিজ্ঞানী বজলুর খচখচানি

বিজ্ঞানী বজলুর খচখচানি

রম্য রচনা, সায়েন্স ফিকশন
ধ্রুব নীল : স্মৃতিবিজড়িত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রকেট উড্ডয়ন ভাস্কর্যের সামনে দাঁড়াতেই নস্টালজিক হয়ে গেলেন বিজ্ঞানী বজলু। ক্যাম্পাসে কত স্মৃতি! তাদের সময় এক হাজার তেপ্পান্ন টাকায় চা সিঙ্গাড়া পাওয়া যেত। এখনও সেই একই দাম। সিঙ্গাড়ার সাইজ ছোট হলেও সঙ্গে জিলুবিনিয়ামের সন্দেশ যোগ হয়েছে। চিনির চেয়ে বহুগুণ বেশি মিষ্টি জিলুবিনিয়াম ডায়াবেটিস রোগীরা অনায়াসে খেতে পারেন। বিজ্ঞানী বজলুর ডাক পড়েছে বিশেষ মহল থেকে। মানে বিশেষ রাষ্ট্রীয় মিশনে যেতে হবে। মিশনে যাওয়ার আগে খানিকটা ঘুরে বেড়ান বজলু। তবে আজ ঘোরাঘুরির মুড নেই। আন্তঃগ্যালাক্টি দুর্নীতির সূচকে পৃথিবীর অবস্থান ১৩তম। দুর্নীতি নিয়ে কারো বিশেষ মাথাব্যথা নেই। ১৩ সংখ্যাটা নিয়েই যত আপত্তি। আর্থ কাউন্সিলের সভায় প্রতিনিধিদের ঘোর আপত্তি- বারো কিংবা বিশ তিরিশ হলেও কথা ছিল বাপু, গুনে গুনে ১৩-ই হতে হবে! ছে! ছে! কী অলক্ষুণে সূচকরে বাব...
ইসমিনির আইডিয়া

ইসমিনির আইডিয়া

রম্য রচনা, সায়েন্স ফিকশন
ধ্রুব নীলের রম্য সায়েন্স ফিকশন ‘কম্পিউটারের গুষ্টি কিলাই।’ কথাটা শব্দ করে বলতে পারলেন না কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের সদ্য সাবেক প্রধান সিফরু খন্দকার। মনে মনে গজগজ করলে ক্ষতি নাই। তার মন পড়ার ক্ষমতা কেন্দ্রীয় কম্পিউটার ওরফে কেক’কে দেওয়া হয়নি। অবশ্য কাউন্সিলের সদ্য সাবেক প্রধানের মন পড়তে পারলেও কেক সেটাকে বিশেষ পাত্তা দিত না। কারণ তার গুষ্টির কেউ নেই। তার পূর্বপুরুষ কেক-৪১৯ সিরিজের কম্পিউটারটাকে আপডেট করেই তাকে বানানো হয়েছে। সুতরাং চাইলেই তার গুষ্টিকে কিলানো সম্ভব নয়। কিন্তু কেন কেক-এর গুষ্টি কিলাতে চাচ্ছেন এইমাত্র সাবেক হওয়া সিফরু খন্দোকার? কারণটা দ্বিতীয়বার জানাল কেক-৪২০। আরও ভদ্রোচিতভাবে, যেন বোঝাতে চাচ্ছেন কম্পিউটার হলেও সে চায় না সিফরুর মনে আঘাত দিতে। কম্পিউটার হলেও তার মাদারবোর্ড বেশ নরম। ‘জনাব সদ্য সাবেক কাউন্সিল প্রধান সিফরু, আপনার মেয়াদ শেষ হওয়া মাত্র আমি নেটওয...
নবম মাত্রার গোবট

নবম মাত্রার গোবট

কিশোর গল্প, রম্য রচনা, সায়েন্স ফিকশন
ধ্রুব নীল : ‘মহামান্য ভভু! সুপারটম্পিউটার টিটিটি বলেছে, সূর্যোদয়ের পরেই বিপর্যয় ঘটে যাবে। একটা গোবট বিগড়ে গেছে। সে নিজেকে ভূত ভাবতে শুরু করেছে!’ ধপধপে সাদা সিনথেটিক আলোর তৈরি উজ্জ্বল পোশাকে মহামান্য ভভু ওরফে ভয়ানস্কি ভুতোকভকে দেখাচ্ছে সন্ন্যাসীর মতো। ‘মামদোনিয়া, আজ কত তারিখ?’ ‘চব্বিশ অমাবস্যা তিন হাজার সাড়ে তেপ্পান্ন যোগ দুই সাল। কিন্তু মহান ভভু আপনি একটা কিছু..!’ ‘পৃথিবীতে আর মানুষ নেই তাই না?’ ‘না মহামান্য ভভু, সবাই অ্যান্ড্রোমিডার ঘুটাং গ্রহে চলে গেছে।’ ‘কিন্তু মানুষ না থাকলে কী করে হবে। এলিয়েনদের ভয় দেখানো তো ভূতদের কাজ নয়।’ ‘এই জন্যই তো আমরা গোবট তৈরি করেছি। আপনিই বলেছিলেন, মানুষ তার কাজের সুবিধার জন্য এককালে রোবট বানিয়েছে। আর আমরাও ভয় দেখাতে বানিয়েছি..।’ ‘তুমি বড্ড বেশি কথা বল মামদোনিয়া।’ ঘুরে দাঁড়ালেন ভয়ানস্কি। তার চোখে মুখে বেশ আমুদে ভাব। ক...
সায়েন্স ফিকশন গল্প : বিরিন্তা

সায়েন্স ফিকশন গল্প : বিরিন্তা

সায়েন্স ফিকশন
ধ্রুব নীলের সায়েন্স ফিকশন গল্প -- বাংলা সন ১৪০১। পাঁচই ফাল্গুন। তৈয়ব আখন্দ বিব্রতকর অবস্থায় উঠোনে বসে আছে। হুরাসাগর নদীতে কী করে মরতে মরতে দশ কেজি সাইজের বোয়াল মাছ ধরেছে সেই গল্প শুনছিল হারু মাঝির কাছ থেকে। মাঝি চলে গেল। রেখে গেল নিরবতা। তৈয়ব গেল মেয়ের পড়ার টেবিলের দিকে। পুরো বাড়িতে বাপ-মেয়ে ছাড়া আর কেউ নেই। মেয়েটাও শব্দ করে পড়ে না। সন্ধ্যা হতেই ঝপ করে বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের নীরবতা নেমে আসে শোলাকুড়ি গ্রামের পুরনো বনেদি ধাঁচের টিনশেডের বাড়িটায়। বাড়িটা তৈয়বের নয়। বাড়ির মালিক তার স্ত্রী আফরিন নাহার। ঝগড়া যতবার হতো, সে-ই চলে যেত রাগ করে। পাশের নরিল্লা গ্রামে বড় ভাইয়ের বাড়িতে গিয়ে উঠত। ‘বিচিত্র ব্যাপার। তোর মা আমাকে বের করে দিলেই পারে। দুনিয়ার সব অঙ্ক ডাইলভাত, সংসারের অঙ্ক মিলাইতে গেলে চক্কর লাগে। এখন তারে আবার তার বাড়িতে ডাইকা আনা লাগবে।’ ‘বাবা, মিষ্টি কুমড়া...
সাইকেলটা প্রতিদিন স্কুলে আসে

সাইকেলটা প্রতিদিন স্কুলে আসে

কিশোর গল্প, সায়েন্স ফিকশন
ধ্রুব নীলের কিশোর সায়েন্স ফিকশন গল্প : স্কুলের উত্তরে পরিত্যক্ত একটা ক্লাসরুম। তার পেছনে জলাভূমি। সেখানে ধান চাষ হয়। মাঝে মাঝে বক-মাছরাঙা দেখা যায়। ভবনের ওই কোণাতেই দেয়ালে ঠেস দিয়ে পড়ে থাকে সাইকেলটা। পড়েই থাকে। ওতে চড়ে কে আসে, কেনই বা সেখানে পড়ে থাকে সাইকেলটা, কে জানে! কেউ জানার চেষ্টাও করেনি কোনোদিন। ক্লাস টেনের পপেল ছাড়া।পপেল তার বন্ধু রানাকে বলেছে বিষয়টা। পাত্তাই দিল না।‘পুরানা ফোনিক্স সাইকেল। এ আর এমন কী। এমনি পড়ে আছে।’‘এখানে প্রতিদিন কে রেখে যায়?’‘কেউ রাখে না। আগে থেকেই ছিল বোধহয়।’‘মাঝে মাঝে তো দেখা যায় না।’‘তখন মনে হয় স্কুল বন্ধ থাকে।’রানার বোকামি টাইপ কথা শুনে বিরক্ত হয় পপেল। বলে ‘সাইকেল যদি এমনি এমনি আসে, তার সঙ্গে স্কুল খোলা-বন্ধের কী সম্পর্ক!’‘ও। তা হলে কেউ নিয়ে যায়, আবার রেখে যায়। আমি গেলাম। টিফিন টাইম শেষ হয়ে যাবে। পরে খিদে পেলে ফোনের অ্যাপগুলোকেই খেয়ে ফেলতে পারি।’পপেলের ভাবনা ...
সায়েন্স ফিকশন গল্প : ত্রুটি

সায়েন্স ফিকশন গল্প : ত্রুটি

অতিপ্রাকৃত গল্প, সায়েন্স ফিকশন
অতিপ্রাকৃত সায়েন্স ফিকশন গল্পটি লিখেছেন ধ্রুব নীল এখন রাত দশটা। সকাল দশটা থেকে তরিকুলের মনে হচ্ছে কোথাও একটা বড় গণ্ডগোল আছে। গণ্ডগোলটা কী সেটা গত বারো ঘণ্টায়ও ধরতে পারেনি। সকাল দশটায় তরিকুল তার মুদিদোকানের শাটার খোলে। গ্রামের বাজারে তরিকুলের ছোটখাট মুদি দোকান। বেচাকেনা মাপমতো। দেরি করে দোকান খুললেও সমস্যা নেই। কাস্টমার হাসিমুখে দাঁড়িয়ে থাকে। সকাল দশটার আগেই যা ঘটল তাতে দোকান খুলতে তরিকুলের দেরি হওয়ার কথা। অথবা দোকানে তার যাওয়ার কথাই না। তারপরও গেল। আধাঘণ্টার হাঁটাপথ। সারাটা পথ ভাবতে ভাবতে হেঁটেছে। কূল কিনারা হয়নি।              ঘটনাটা এমন- তরিকুল নাস্তা শেষ করে নলকূপ চিপে হাত ধুচ্ছিল। এমন সময় দেখল বাড়ির সামনের পুকুরঘাটে বসে পাতিল মাজছে রুনু। কিন্তু তার কাছে মনে হচ্ছিল রুনু আছে রান্নাঘরে। নাস্তার কোন ফাঁকে শাড়...

পল্টু ফটিক ও ছেলিম মামার গল্প

কিশোর গল্প, সায়েন্স ফিকশন
ধ্রুব নীলের সায়েন্স ফটিক দৌড়াচ্ছে। মাঠ ঘাট খাল বিল পেরিয়ে দৌড়েই যাচ্ছে। পেছনে কুকুর তাড়া করলে যেভাবে দৌড়ায় সেভাবে। কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য বেঁচে থাকলে লিখতেন, ফটিক ছুটেছে ফটিক, তাই ঝুম ঝুম ঘণ্টা বাজছে… যাই হোক, ফটিক যাচ্ছে তার বন্ধু পল্টুর কাছে। পল্টুর বাসা ফুলতলা গ্রামের একেবারে শেষ সীমায়। দৌড়ে না গেলে বেলা পড়ে যাবে। উঠোনে দাঁড়িয়ে কিছুক্ষণ জিভ বের করে হাঁফিয়ে নিল ফটিক। পল্টু দুপুরে ঘুমায়। লম্বা করে হাই তুলে বলল, পাগলা কুকুর তাড়া করেছে?ফটিক সূচনা ভূমিকায় না গিয়ে সোজা বর্ণনায় গেল।'মহাবিপদ হয়ে গেছে। মানে, বিশাল একটা ব্যাপার। ছেলিম মামা একটা জিনিস আবিষ্কার করেছে।'‘কী জিনিস রে! খাওয়া যায়? স্বাদ কেমন? মিষ্টি নিশ্চয়ই? সঙ্গে আছে?’‘আরে নারে! ছেলিম মামা অংক টংক করে বের করেছে, আমাদের এই গ্রাম আর আমরা সবাই একটা গল্পের ভেতর আছি। কাগজে ছাপা হওয়া গল্প। বুঝতে পারলি!’‘অ্যাঁ, বলছিস কী! আমি তুই গল্পের...
বিকেল পাঁচটার পর

বিকেল পাঁচটার পর

কিশোর গল্প, সায়েন্স ফিকশন
ধ্রুব নীলের সায়েন্স ফিকশন গল্প ১ সামছুল করিম কলেজে বছর বিশেক হলো অংক পড়ান আবদুল মতিন। বয়স ষাটের কাছাকাছি। এখনো শক্তসমর্থ। হাঁটাহাঁটি করেন সারাদিন। একই কলেজের পদার্থবিজ্ঞানের শিক্ষক নেপাল চন্দ্রের সঙ্গে জমে ভালো। দুজনই সমবয়সী। বহুদিনের বন্ধুত্ব। ক্লাসের ফাঁকে সময় পেলেই দুজন বিজ্ঞানের কঠিন কঠিন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। আবদুল মতিন অবশ্য পদার্থবিজ্ঞানের অনেক কিছু না বুঝেও হাঁ হুঁ করে চালিয়ে যান। কঠিন আলাপের এক পর্যায়ে নেপাল চন্দ্র নিজেও খেই হারিয়ে মাথা দোলাতে দোলাতে চলে যান অন্য রুমে। ‘বুঝলি মতিন, সময় আমাদের চোখের সামনে থাকে। বয়ে যায়। কিন্তু আমরা সেটা বুঝতে পারি না। ধরতে পারি না। আমাদের মনে হয় ওটা একটা ফাঁকি। কিন্তু না। সময় জিনিসটা একেক জায়গায় একেক গতিতে চলে।’ ‘বিষয়টা আমার মুখস্থ। এই নিয়া পঁচানব্বইবার শুনছি।’ ‘না, ধর, সময় কোথাও আস্তে চলে, কোথাও দ্রুত। দুইটাকে পা...