Friday, July 4
Shadow

কিশোর গল্প

This section will contain stories for juvenile readers. এই বিভাগে থাকবে কিশোর বয়সীদের গল্প

ভয়ানস্কির চ্যালেঞ্জ

ভয়ানস্কির চ্যালেঞ্জ

কিশোর গল্প, রম্য রচনা
কিশোরদের জন্য ধ্রুব নীলের মজার ভূতের গল্প দ্য ভৌতিক টাইমস পত্রিকাটা হাতে নিতেই মেজাজ খারাপ হয়ে গেল ভূতবিজ্ঞানী ভয়ানস্কির। প্রথম পাতায় বড় বড় করে লেখা। চাঁদের আলোর ভয়াবহ সঙ্কট আলোর পাশাপাশি বেশি করে আলু খান নিজস্ব ভূতাংদিক, পোড়াবাড়ির ছাদ থেকে: মানুষের তৈরি উঁচু উঁচু ভবনের আড়ালে আশঙ্কাজনক ভাবে ঢাকা পড়েছে চাঁদ। গত এক মাসে তাই চাঁদের আলোর দাম বেড়েছে লিটারপ্রতি দশ টাকা। এ নিয়ে তিন দফা আলোর দাম বাড়লো। এ পরিস্থিতিকে ভূতাধিকারের চরম বিপর্যয় বলেছেন দেশের অন্যতম ভুতবিজ্ঞানী ভয়ানস্কি। তিনি আরো বলেছেন, ‘আমরা ভূতরা যদি মানুষের দেখাদেখি আলোর পরিবর্তে বেশি করে আলু খাওয়া শুরু করি, তাহলে খাদ্যসঙ্কট কিছুটা কমতে পারে।’ এটুকু পড়েই পত্রিকাটা ছুড়ে ফেললেন ভয়ানস্কি। ইদানীং কন্ধকাটাগুলোকে দিয়েই সংবাদ লেখানো হচ্ছে। মাথা থাকলে কি আর এসব হাস্যকর কথা লেখে! আলু খাওয়ার ব্যাপারটা ত...
নবম মাত্রার গোবট

নবম মাত্রার গোবট

কিশোর গল্প, রম্য রচনা, সায়েন্স ফিকশন
ধ্রুব নীল : ‘মহামান্য ভভু! সুপারটম্পিউটার টিটিটি বলেছে, সূর্যোদয়ের পরেই বিপর্যয় ঘটে যাবে। একটা গোবট বিগড়ে গেছে। সে নিজেকে ভূত ভাবতে শুরু করেছে!’ ধপধপে সাদা সিনথেটিক আলোর তৈরি উজ্জ্বল পোশাকে মহামান্য ভভু ওরফে ভয়ানস্কি ভুতোকভকে দেখাচ্ছে সন্ন্যাসীর মতো। ‘মামদোনিয়া, আজ কত তারিখ?’ ‘চব্বিশ অমাবস্যা তিন হাজার সাড়ে তেপ্পান্ন যোগ দুই সাল। কিন্তু মহান ভভু আপনি একটা কিছু..!’ ‘পৃথিবীতে আর মানুষ নেই তাই না?’ ‘না মহামান্য ভভু, সবাই অ্যান্ড্রোমিডার ঘুটাং গ্রহে চলে গেছে।’ ‘কিন্তু মানুষ না থাকলে কী করে হবে। এলিয়েনদের ভয় দেখানো তো ভূতদের কাজ নয়।’ ‘এই জন্যই তো আমরা গোবট তৈরি করেছি। আপনিই বলেছিলেন, মানুষ তার কাজের সুবিধার জন্য এককালে রোবট বানিয়েছে। আর আমরাও ভয় দেখাতে বানিয়েছি..।’ ‘তুমি বড্ড বেশি কথা বল মামদোনিয়া।’ ঘুরে দাঁড়ালেন ভয়ানস্কি। তার চোখে মুখে বেশ আমুদে ভাব। ক...
ভয়ানস্কির সিনেমা

ভয়ানস্কির সিনেমা

কিশোর গল্প
ধ্রুব নীল : লাইট! ক্যামেরা! অ্যাকশন! ‘অ্যাঁ, ইয়ে মানে, আঁমাদের এঁকন কী কঁরতে হবে? ইয়ে অ্যাঁ, হ্যাঁ মনে পড়েচে, আমাদের শাকচুন্নিকে উদ্দার করতে যেঁতে অঁবে..’ ‘কাট!’ চেঁচালে ভয়ানস্কির তিনটি চোখই ইঞ্চি দুয়েক ফুলে যায়। তাকে দেখতে তখন প্রাগৈতিহাসিক রাক্ষসদের মতো মনে হয়। ‘মামদো! কত্তোবার বলেছি! নো নাকি নাকি ভয়েস! নিজেকে হিমেশ ভাবা শুরু করেছ? নো! এসব চলবে না! আই নিড অ্যাক্টিং! সিরিয়াস অভিনয় করতে হবে! বুঝলে!’ মামদো বেচারার আর কী দোষ। পড়াশোনা বেশি করেনি। তাই উচ্চারণে একটু আধটু ত্র“টি রয়ে গেছে। তারপরও দেখতে কিছুটা ভয়ংকর বলে ভয়ানস্কি তাকে নায়কের রোল না দিয়ে পারলেন না। ‘দেখ মামদো! শেষবারের মতো বলছি, তোমাকে ডায়ালগ দিতে হবে। ভাবতে হবে, যা ঘটছে তা সত্যি ঘটছে। নিজেকে সত্যি সত্যি ভলিউডের মহানায়ক সর্বভুক খান ভাবতে হবে। আন্ডারস্ট্যান্ড? চুপ কেন! বুঝেছ!’ মামদো চিন্তায় পড়...
ভূতের ভয়

ভূতের ভয়

কিশোর গল্প
ধ্রুব নীল: অতীতের সোনালী দিনের স্মৃতিগুলো নাকের তিন নম্বর ফুটো দিয়ে অনায়াসে ফুরুৎ করে উড়িয়ে দিতে পারেন ভয়ানস্কি। তাই নতুন করে প্ল্যান করতে তার কষ্ট হয় না। আগে ছিলেন ভুতুড়ে প্রাইভেট কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান। এখন হাউমাউ কোচিং সেন্টারের প্রধান ও একমাত্র শিক্ষক। তিন জন ছাত্র। তিনটে বাচ্চা ভূত। চিকু বিকু নিকু। তারা এসেছে ভয় দেখানো শিখতে। মানুষকে ভয় দেখাতে না পারলে মা শাকচুন্নি তাদের খাওয়া বন্ধ করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। ভয়ানস্কির ওপর তাই গুরুদায়িত্ব। কুসুমপুর গ্রামের সুপ্রাচীন বটগাছের ঠিক মাঝ বরাবর একটা মোটা ডালের ওপরই গোটা ক্লাসরুম। একপাশে ভয়ানস্কির বসার মতো আরেকটা ডাল। তার পেছনে মিনি ডিজিটাল ডিসপ্লে। ভয়ানস্কির নিজস্ব আবিস্কার ওটা। ঐ ডিজিটাল যন্ত্রটার কারণেই ভয়ানস্কি তার বিজ্ঞাপনে লিখেছিলেন, ‘এখানে কম্পিউটারাইজড পদ্ধতিতে ভয় দেখানো শেখানো হয়।’ রাত দশটা পার হত...
আকাশের পাখিরা

আকাশের পাখিরা

কিশোর গল্প
আলমগীর কবির : আকাশ পাখি ভালোবাসে।পাখিদের জন্য ওর মনে অনেক মায়া।ওদের বাসায় অনেক পোষা কবুতর আছে। আকাশ একটু অবসর পেলেই ছুটে যায় কবুতরগুলোর কাছে। খাবার দেয়। জল দেয়। গল্প করে সময় কাটায় তাদের সাথে।  কবুতরগুলোও কত সুন্দর। মায়াবী! কিন্তুু কেন এতো ভালোবাসে  সে পাখিদের?  তার গল্প আছে একটা। তখন সে ক্লাস ফোরে পড়ত।বাবাকে বলে দুইটি ঘুঘু পাখি কিনে নিয়েছিল পোষার জন্য। অনেক যত্ন করত সে পাখি দুটির।তবু একটি পাখি এক ঝড়ের রাতে মারা যায়। আকাশের মনে অপরাধ বোধ কাজ করে তারপর থেকে।  অন্য পাখিটিকে সে সেদিনেই মুক্ত করে দিয়েছিল। সেই থেকে পাখিদের প্রতি তার বড় বেশি মায়া।  আকাশ তাদের উঠোনে বসে আছে। উঠোনের পাশে সারি সারি খেজুরের গাছ।খেজুরের রস খেতে বুলবুলি, শালিক পাখিরা ছুটোছুটি করছে। একটু দূরে নারকেল গাছে কাকদের আনাগোনা।  আকাশ মায়ের কাছ থেকে চাল ...
খোকার ঈদ

খোকার ঈদ

কিশোর গল্প
মো. আশতাব হোসেন : কোরবানি ঈদের চাঁদ দেখে চঞ্চলের খুশির সীমা নেই।  ঈদের আর ক'দিন বাকি আছে চঞ্চল প্রতিনিয়ত গুণতেই আছে । তার অপেক্ষা যেন শেষ হচ্ছে না।  ইতোমধ্যেই তার বাবা মজিদ সরকার চঞ্চলের ঈদের নতুন জামাকাপড় কিনে দিয়েছে। চঞ্চল তার বন্ধু বান্ধবদের ডেকে এনে নতুন পোশাকগুলি দেখায় রোজ রোজ। কেউ যদি বলে, বাহ্! তোমার পোশাকগুলি অসাধারণ হয়েছে। তাহলে তার  খুশির সীমা থাকে না।পাশের বাড়ির এক বয়স্ক মহিলা যাকে চঞ্চলসহ তার বয়সী সকল ছেলেমেয়েরা দিদা বলে ডাকে, তাকে হাত ধরে নিয়ে আসে চঞ্চল তার নতুন পোশাক দেখানোর জন্য। বুড়ি তো ঠিকমতো চোখেই  দেখে না বয়সের ভারে। কিন্তু ছোট চঞ্চল এতোকিছু বুঝে না। সে পোশাক বের করে বলে, ' দিদা, আমার ঈদের পোশাকগুলি কেমন হয়েছে দেখো তো? দিদা হাতে নেড়ে নেড়ে চঞ্চলের জিন্সের প্যান্ট দেখে বলে,  'বেশতো চঞ্চল,  খুব মোটা আছে। শীতের মধ্যে আরাম হবে, শীত লাগবে না  তোর।' এর...
হেলদি ক্লাবের হুলস্থূল

হেলদি ক্লাবের হুলস্থূল

কিশোর গল্প
জুয়েল আশরাফ : পদ্মপুর গ্রামের স্কুলে একটা আজব ক্লাব ছিল—'হেলদি ক্লাব'। এই ক্লাবের সদস্যরা ছিল বিশাল একদল দুষ্টু ছেলেমেয়ে, আর তাদের নেতা ছিল বোকা রাজু! রাজু মোটেও স্বাস্থ্য সচেতন ছিল না। ওর খাবারের লিস্টে থাকত—চিপস, চকোলেট, আইসক্রিম, আর কোল্ড ড্রিংকস। একদিন, হেডস্যার স্কুলের সব ছাত্রকে ডেকে বললেন, এবার থেকে স্কুলে স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়ানোর জন্য 'হেলদি ক্লাব' তৈরি করা হবে! ক্লাবের নেতা হবে রাজু! রাজুর চোয়াল ঝুলে গেল। ওর মাথায় শুধু চকোলেট ঘুরছিল, আর এখানে তাকে স্বাস্থ্য সচেতন হতে হবে? কিন্তু হেডস্যার আরও ঘোষণা দিলেন, যে দল সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করবে, তাদের জন্য থাকবে স্পেশাল পুরস্কার! এটা শুনেই রাজুর চোখ চকচক করে উঠল! রাজু ভাবল, পুরস্কার তো চাই, কিন্তু স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন? নাহ, এটা কঠিন! তাই ও এক ধূর্ত বুদ্ধি আঁটল! ওর বন্ধুরা—সুমন, টুকুন, আর পল্টু সব...
লাল ফুল

লাল ফুল

কিশোর গল্প, জাদু-বাস্তবতা
ধ্রুব নীল : সিলিংয়ের দিকে তাকিয়ে এক এক করে বত্রিশ পর্যন্ত গুনে ফেলেছে অন্তু। তবু ঘুম আসার জো নেই। মাকড়সার ঝুলের ভেতর একটা নীল পোকা আটকে আছে। ওটার দিকে তাকিয়ে থাকলেও অন্তু ভাবছে অন্য কিছু। মনে মনে নিজের বয়স হিসেব করলো একবার। তিন হাজার চুয়ান্ন থেকে বাষট্টি সাল। কতো হলো? সাত নাকি আট পেরুলো? মনে মনে ধরে নিল এখন তার বয়স আট। তারমানে এখন তার একটা গোপন কুঠুরী থাকতে পারে। যেমনটা ছিল তার দাদার। দাদার কথা মনে পড়তেই আবার চিন্তা ঘিরে ধরলো অন্তুকে। দাদা মারা গেছেন পাঁচ দিন হলো। কিন্তু অন্তু দাদাকে কখনই ভুলতে পারবে না। দাদা তাকে বিশাল এক দায়িত্ব দিয়ে গেছেন। একটা বাক্স পাহারা দেয়ার দায়িত্ব। ওটা আছে ঘরের পেছনের একটা কড়ই গাছের গোড়ায়। মাটির তলায়। ওটাই এখন অন্তুর গোপন কুঠুরী। তাই অন্য সবার মতো ঘুমানোর আগে শেষবারের মতো গোপন কুঠুরীর সব ঠিকঠাক আছে কিনা তা দেখে আসার তাগিদ অনুভব করলো অন্তু। ...
পিবিজ্ঞানী পিপি

পিবিজ্ঞানী পিপি

কিশোর গল্প
ধ্রুব নীল : মানুষ যেমন নাছোড়বান্দা হয়, পিপি তেমনি নাছোড়পিপড়া। কিছুই ছাড়বে না সে। হাতের কাছে যা পাবে, তা’ই ধরে দেখবে। যদি নতুন একটা কিছু বানানো যায়! গতবছর এভাবে একটা মাটি খোঁড়ার বেলচা আর মোটর জুড়ে দিয়ে বানিয়ে ফেলেছিল আজব এক যন্ত্র। সবাই দারুণ প্রশংসা করেছিল পিপির। যন্ত্রটা দিয়ে এক সেকেন্ডের মধ্যে মাটি খুড়ে ভেতরে ঢুকে যাওয়া যায়। মানুষের পায়ের চাপ থেকে বাঁচার জন্য যন্ত্রটার জুড়ি নেই। যন্ত্রটার জন্য পিপি বছরের সেরা পিবিজ্ঞান পুরস্কার পেয়েছিল। মহল্লার রানী পিঁপড়া তাকে নিজ হাতে চিনির দানা খাইয়ে দিয়েছিলেন। আহা! সেই স্বাদ এখনো ভুলতে পারছে না পিপি। কিন্তু কী করবে, এ বছরে একটা নতুন আবিষ্কারও করতে পারেনি বেচারি। বসে বসে কেবল ভেবেছে আর ভেবেছে। তবে আজকে একেবারে মাথার দুটো শুঁড় বেঁধে নেমে পড়েছে পিপি। নতুন কিছু আবিষ্কার করেই ছাড়বে।সকাল থেকে পিপিকে খুঁজে পাচ্ছে না তার মা চি বেগম। মেয়েটা অল্পবয়সেই ...
অঙ্কপুরের গল্প

অঙ্কপুরের গল্প

কিশোর গল্প
ধ্রুব নীল : মগডালে দুটো পা পেঁচিয়ে উল্টো হয়ে ঝুলে আছে ছোট্টা খোকা শূন্য। তার মারাত্মক মন খারাপ। আজকের ঝগড়াটা একটু একতরফা হয়ে গেছে। এক আর দুইয়ের সঙ্গে আজ একটুও পেরে ওঠেনি সে। দেখতে ছোট বলে এভাবে সবার সামনে অপমান করতে হবে? এক বলে কিনা, ‘তোর তো কোনো মান নেই, একেবারে অর্থহীন। তোর নামের মানে বুঝিস? এক্কেবারে ফাঁকা। ফাঁকা মানে ফক্কা, ফক্কা মানে জিরো, জিরো মানে শূন্য।’ তার সঙ্গে তাল মিলিয়েছে হতচ্ছাড়ি দুই। বেণী দুলিয়ে বলে, ‘তুই যে কেন আছিস তা তুই নিজেও জানিস না। এই আমাকেই দেখ না! সবচে ছোট মৌলিক সংখ্যা আমি, সবাই আদর করে। তুই তো অংকই না।’ মন খারাপ হলেই শূন্য গাছের ডালে পা আটকে উল্টো হয়ে ঝুলে থাকে। একদম স্থির। কেউ বুঝতেই পারে না। আজও তাই ঝুলে আছে। ঝুলতে ঝুলতে শূন্য ভাবছে তার শৈশবের কথা। তাকে অংকপুরে এনে দিয়েছিল আর্যভট্ট নামের এক ভারতীয় গণিতবিদ। তারপর গোটা বিশ্বে সেকি হই চই। তার কারণ...