Monday, June 30
Shadow

Tag: পরাবাস্তব গল্প

হরর থ্রিলার গল্প : সি আই পি এ

হরর থ্রিলার গল্প : সি আই পি এ

অতিপ্রাকৃত গল্প, থ্রিলার গল্প, হরর গল্প
ধ্রুব নীলের হরর থ্রিলার গল্প : সি আই পি এ রেনু খুন হওয়ার দেড় মাসের মাথায় খুনিকে ধরেছে রশিদ। খুনি এখন তার সামনে ভারী কাঠের চেয়ারে হাত-পা বাঁধা বন্দি। ‘তুমি আমার একচল্লিশ নম্বর সাবজেক্টের... স্বামী। চিনতে পেরেছি আগেই।’ খুনি বলল। রশিদের স্ত্রী রেনুকে ভয়াবহ যন্ত্রণা দিয়ে সে-ই মেরেছে। ফ্ল্যাট বাসার ভেতরের একটা রুম। ভেতরে ঝলমলে আলো। দুই লেয়ারের ভারী পর্দায় ঢাকা চারপাশ। রুমটা সাউন্ডপ্রুফ করতেই লাখ তিনেক খরচ করেছে রশিদ। অ্যাকুস্টিক প্লাস্টারবোর্ডের সঙ্গে ফোমও বসিয়েছে। তবে খুনি লোকটা একবারও চেঁচামেচি করেনি। খুনির নাম জানা নেই। নাম নিয়ে রশিদের আগ্রহ নেই। পত্রিকার দেওয়া নামটা হলো ‘সলটেড কিলার’। ভিকটিমকে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে রক্তাক্ত করতো। তারপর লবণ বা এ জাতীয় কিছু মেখে দিত। মরার আগ পর্যন্ত চলতো অমানুষিক নির্যাতন। দুয়েকটা ডেডবডিতে হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড ও ভিনেগারের ট্রেস পা...

বোধ

জাদু-বাস্তবতা, রোমান্টিক ছোটগল্প
গত ছমাস ক্ষণিকা হাসপাতালে। কোনো কাজ নেই। দিনরাত শুধু শুয়ে থাকা। প্রথম কদিন বেশ খারাপ লেগেছিল। পরে সয়ে এসেছে। বিছানায় শুয়ে চোখ বুঁজে ভাবাটাই এখন তার কাজ। মাঝে মাঝে বদ্ধ পরিবেশটায় সবকিছু অসহনীয় মনে হয়। কিন্তু চোখ বুঁজলেই মনে হয় সামনে অসীম দিগন্ত। হাসপাতালে ছমাস। অথচ ক্ষণিকার স্বামী তাকে একবারও দেখতে আসেনি। ইশ্, অন্তুটা না জানি কী করছে! সামনের ডিসেম্বরে তিনে পা দেবে। এই সেদিন টুকটুক করে কথা বলা শিখেছে। বদ্ধ পরিবেশটায় থাকলে সময় বোধহয় দ্রুতই যায়। ইমতিয়াজ কি অন্তুকে ঠিকমতো সময় দিচ্ছে? সে নিজেই তো ভুলোমনা। ক্ষণিকা এ জন্য তাকে একটা নামও দিয়েছে, ‘ভুলু’। সন্তান ও স্বামীর কথা অনেক ভেবেছে ক্ষণিকা। প্রথম দিকে খুব অভিমান জন্মালেও এখন আর তা নেই। চোখ বন্ধ করে চাইলেই সে এখন অন্তুকে আদর করতে পারে। কেবল ঠিকমতো কথা বলতে পারে না। কিছু বলতে গেলেই গা ঝাঁকিয়ে দৌড়ে পালাবে। আপাতত ভাবার মতো...
হরর ভৌতিক গল্প: রাজেন্দ্র সরকারের অপমৃত্যু

হরর ভৌতিক গল্প: রাজেন্দ্র সরকারের অপমৃত্যু

হরর গল্প
লেখক: ধ্রুব নীল ‘আজ রাত বারোটায় আত্মহত্যা করবো। মর্ত্যলোক ত্যাগের চূড়ান্ত ক্ষণের খুব বেশি বাকি নেই।’ ‘জি জ্যাঠামশাই।’ ‘ভাদুড়িকে সব বলা আছে। চব্বিশে আষাঢ়। সব ঠিকঠাক! সব! গাড়ি নিয়ে আসবে পৌনে একটায়। আমার ডেডবডি কফিনে ঢোকানোর দায়িত্ব তোমার। পরে যা করার ভাদুড়ি করবে। পারবে তো?’ ‘জি জ্যাঠামশাই।’ ‘বৈদ্যকে বলবে হাত লাগাতে। কফিন আটকে ভালোমতো লক করবে। ঝড়ও আসবে। ইলেকট্রিসিটি থাকবে না। যাও এখন বিদেয় হও।’ বয়স সত্তর ছুঁলেও মুগুরভাজা শরীর রাজেন্দ্র সরকারের। যমের মতো ডরায় বিজন। মা-বাপ হারা ছেলেটাকে কোলেপিঠে নয়, কেলিয়ে-পিটিয়ে বড় করেছেন। জাঁদরেল স্বভাবের কারণে নিজের সংসার হয়ে ওঠেনি। আবার বাইশ বছরের ভাইপোকে একটিবারের জন্য নিজের সন্তানও ভাবতে পারেননি। বিজনের সঙ্গে রাজেন্দ্র সরকারের সম্পর্কটা তাই প্রভু-ভৃত্যের মাঝামাঝি এক আলো-আঁধারিতে দোদুল্যমান। রাজেন্দ্র সরকারের কণ্ঠের স...
সাইকেলটা প্রতিদিন স্কুলে আসে

সাইকেলটা প্রতিদিন স্কুলে আসে

কিশোর গল্প, সায়েন্স ফিকশন
ধ্রুব নীলের কিশোর সায়েন্স ফিকশন গল্প : স্কুলের উত্তরে পরিত্যক্ত একটা ক্লাসরুম। তার পেছনে জলাভূমি। সেখানে ধান চাষ হয়। মাঝে মাঝে বক-মাছরাঙা দেখা যায়। ভবনের ওই কোণাতেই দেয়ালে ঠেস দিয়ে পড়ে থাকে সাইকেলটা। পড়েই থাকে। ওতে চড়ে কে আসে, কেনই বা সেখানে পড়ে থাকে সাইকেলটা, কে জানে! কেউ জানার চেষ্টাও করেনি কোনোদিন। ক্লাস টেনের পপেল ছাড়া।পপেল তার বন্ধু রানাকে বলেছে বিষয়টা। পাত্তাই দিল না।‘পুরানা ফোনিক্স সাইকেল। এ আর এমন কী। এমনি পড়ে আছে।’‘এখানে প্রতিদিন কে রেখে যায়?’‘কেউ রাখে না। আগে থেকেই ছিল বোধহয়।’‘মাঝে মাঝে তো দেখা যায় না।’‘তখন মনে হয় স্কুল বন্ধ থাকে।’রানার বোকামি টাইপ কথা শুনে বিরক্ত হয় পপেল। বলে ‘সাইকেল যদি এমনি এমনি আসে, তার সঙ্গে স্কুল খোলা-বন্ধের কী সম্পর্ক!’‘ও। তা হলে কেউ নিয়ে যায়, আবার রেখে যায়। আমি গেলাম। টিফিন টাইম শেষ হয়ে যাবে। পরে খিদে পেলে ফোনের অ্যাপগুলোকেই খেয়ে ফেলতে পারি।’পপেলের ভাবনা ...
সায়েন্স ফিকশন গল্প : ত্রুটি

সায়েন্স ফিকশন গল্প : ত্রুটি

অতিপ্রাকৃত গল্প, সায়েন্স ফিকশন
অতিপ্রাকৃত সায়েন্স ফিকশন গল্পটি লিখেছেন ধ্রুব নীল এখন রাত দশটা। সকাল দশটা থেকে তরিকুলের মনে হচ্ছে কোথাও একটা বড় গণ্ডগোল আছে। গণ্ডগোলটা কী সেটা গত বারো ঘণ্টায়ও ধরতে পারেনি। সকাল দশটায় তরিকুল তার মুদিদোকানের শাটার খোলে। গ্রামের বাজারে তরিকুলের ছোটখাট মুদি দোকান। বেচাকেনা মাপমতো। দেরি করে দোকান খুললেও সমস্যা নেই। কাস্টমার হাসিমুখে দাঁড়িয়ে থাকে। সকাল দশটার আগেই যা ঘটল তাতে দোকান খুলতে তরিকুলের দেরি হওয়ার কথা। অথবা দোকানে তার যাওয়ার কথাই না। তারপরও গেল। আধাঘণ্টার হাঁটাপথ। সারাটা পথ ভাবতে ভাবতে হেঁটেছে। কূল কিনারা হয়নি।              ঘটনাটা এমন- তরিকুল নাস্তা শেষ করে নলকূপ চিপে হাত ধুচ্ছিল। এমন সময় দেখল বাড়ির সামনের পুকুরঘাটে বসে পাতিল মাজছে রুনু। কিন্তু তার কাছে মনে হচ্ছিল রুনু আছে রান্নাঘরে। নাস্তার কোন ফাঁকে শাড়...

গল্প : আলাপ

জাদু-বাস্তবতা
‘তোমরা বান্ধবীরা মিলে কোথাও ঘুরতেও তো যেতে পারো। চাকরি থেকে ছুটি নাও কদিনের।’ জানালার কপাট খুলে গোলগাল চাঁদটাকে দেখতে দেখতে বলল সুজন। রেনু চোখ বুঁজে আছে। ‘তোমার কারণেই তো যেতে পারি না।’ মৃদু অনুযোগ। তবে ভিত্তিহীন। ‘তোমার বান্ধবীরা তো বেশ ঘুরছে। একজন আছে না, কী যেন নাম তার।’ ‘মিথিলার কথা বলছো?’ ‘হুম।’ ‘ও তো দুর্ধর্ষ। পাহাড়পর্বতে চড়ে বেড়ায়। টাকার অভাব নেই।’ চাঁদের আলো মুখে মেখে নিচ্ছে সুজন। নড়ে উঠল রেনু। কাটিয়ে নিল আড়ষ্টতা। ‘হুমম। এ জন্যই এমন ফিগার ধরে রাখতে পেরেছে। তুমিও ওর সঙ্গে পাহাড়ে চড়তে শুরু করে দাও না কেন।’ ‘কেন? শায়লার ফিগার কি খারাপ নাকি! ও তো পাহাড়ের ধারে কাছেও যায় না।’ ‘খোঁজ নিয়ে দেখো, ঠিকই ইয়োগা করছে।’ বলতে বলতেই রেনুর আঙুলের ফাঁকে নিজের আঙুলগুলোর জায়গা করে নিল সুজন। আজকের চাঁদটা বেশ বড়। আকাশটাও বারবার ফুলেফেঁপে উঠছে, চাঁদের খাতিরে...
ডার্ক ম্যাটার

ডার্ক ম্যাটার

অতিপ্রাকৃত গল্প, হরর গল্প
লেখক: ধ্রুব নীল মাচায় শুয়ে আকাশ দেখতে গিয়ে নুরুল আফসারের মনে হয় তার মাথার ওপর যে বিস্তৃর্ণ আকাশ, তেমনি ওই আকাশের সাপেক্ষে সে-ও আছে অনেক উপরে। সে চাইলেই দূরের নক্ষত্রে যেতে পারছে না, নক্ষত্ররাও তার কাছে আসতে পারছে না। আকাশে মেঘ। মেঘ যখন ছিল না তখন লালচে কূপির মতো বহুকাল আগের কোনো এক তারায় আটকে ছিল নুরুলের দৃষ্টি। মেঘ জমতেই একটা অদৃশ্য চাদর প্রবল বেগে মোচড় খেয়ে ঘিরে ধরে নুরুলকে। অর্থাৎ নুরুল তার কল্পনার আলো-আঁধারি জগতে ঢুকে পড়তে চলেছে। কল্পনার বিষয়টা তার কাছে গ্রহ নক্ষত্রের মধ্যকার টানাটানির মতো। গভীরে কী ঘটে জানে না। তবে অস্বীকার করার জো নেই। নুরুল আফসার আপাত-অদৃশ্য সেই চাদরে ডুব দিয়ে নিজের বলয়ে ঢুকে পড়ে। নিজের এই জগতে নুরুল অন্য মানব। ঘরের চাল দিয়ে পানি পড়ে না। বৃষ্টি হয় তাল-লয় মেনে। ঘড়ির কাঁটা ঘোরে কল্পনাকারীর মর্জিমাফিক। বাইরে ঝড়ের বাতিক। শীতে কেঁপে ওঠে ...

অন্ধ চাঁদের কালো আলো

হরর গল্প
(দুর্বলচিত্তের পাঠকরা গল্পটি এড়িয়ে চললেই ভালো। লিখেছেন ধ্রুব নীল) ভোরের আগে ব্রিটিশ আমলের গোডাউন। ঝাড়পোঁচ করার পরও স্যাঁতস্যাঁতে ভাবটা কাটেনি। শূন্য ঘরের মাঝে চার ফুট উঁচু বেঞ্চি। তাতে নিথর দেহটি রাখা। ঘরের বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম সরানো হয়েছে। হারিকেন আর মোমবাতির ব্যবস্থা করা ছিল আগেই। ওগুলো জ্বলছে স্থির শিখায়। পুরো প্রক্রিয়াটার তারাও সাক্ষী হতে এসেছে যেন। বেঞ্চির একপাশে মনোয়ারা। অন্যপাশে বৃদ্ধ জিঁয়ৎ কুন্ডু। অশীতিপর বৃদ্ধ তার ধাতব বাক্সটা গোছালেন ধীরেসুস্থে। মেঝেতে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন কোনো একটা তরল। যে কারণে জমাট রক্ত ও অন্যান্য জৈবিক অংশগুলো থেকে বোঁটকা গন্ধ নাকে বাড়ি খেল না। মনোয়ারা তার হাতব্যাগ থেকে টাকাটা এগিয়ে দিল। বৃদ্ধ ইশারায় অপেক্ষা করতে বলল তাকে। ধাতব বাক্সটায় ছুরি, কাঁচি, সেলাইয়ের যন্ত্রপাতি, রাসায়নিকের বোতল; প্রতিটি জিনিসের জন্য আলাদা খোপ আছে। খাপে খাপে সব ...