Friday, July 4
Shadow

কিশোর গল্প

This section will contain stories for juvenile readers. এই বিভাগে থাকবে কিশোর বয়সীদের গল্প

ছোটদের গল্প : পিপির প্ল্যান

ছোটদের গল্প : পিপির প্ল্যান

কিশোর গল্প
পিপির মন খারাপ। মা আজও বকেছে। সে নাকি বসে বসে শুধু চিনি খায় আর ঘুমায়। কিন্তু সে যে মস্ত বড় বিজ্ঞানী এটা কারো মাথাতেই ঢোকে না। সে-ই প্রথম প্রমাণ করলো, শুধু মরার সময়ই পিঁপড়ার পাখা গজায় না, এর আগেই চাইলে পিপড়ারা পাখা লাগিয়ে উড়তে পারে। ইলেকট্রনিক পাখা বানানোর জন্য গত বছর সেরা পিবিজ্ঞানীর পুরস্কার পেয়েছিল সে। আর বিজ্ঞানীরা তো একটু বেশি ঘুমাবেই। টিটিনপুর পাশেই আছে ইয়া বড় এক দালান। সেখানে আবার রেড ইন্ডিয়ান পিপড়াদের কলোনি। অবশ্য এখন পর্যন্ত মিলেমিশে আছে সবাই। লাল পিঁপড়ের দল খাবার খোঁজার সময় ঘাড় উঁচিয়ে টিটিনপুরের দিকে তাকালেও কখনও কিছু বলেনি। ওদের নিয়েই চিন্তায় আছে পিপি। যদি আক্রমণ করে বসে! চিন্তা করা ছাড়া আপাতত কাজও পাচ্ছে না। কারণ অন্যদের মতো লাইন ধরে খাবার খুঁজতে তার ভাল লাগে না। সবাই খাবার জমা করার কাজে ব্যস্ত। সামনে নাকি বর্ষার মৌসুম। কিন্তু পিপি জানে, বর্ষা হলেও তার খাবার খুঁজতে সমস্যা...

কিশোর গল্প: কাকের ডিম

কিশোর গল্প, জাদু-বাস্তবতা
প্রশ্নটা গলা পর্যন্ত এসেও বের হচ্ছে না। কিছুতেই না। রাকিব জানে প্রশ্নটা এখন গুরুত্বপূর্ণ নয়। তবু করতে ইচ্ছে করছে। অনেক্ষণ ভাবার পর যেই প্রশ্নটা করতে যাবে, তার আগেই ছেলেটা বলল- ‘নাও ধরো, সাবধানে ধরবে। ফেটে গেলে তুমি.. না না তুমি ফেরত দেবে কী করে, তুমি তো কাক না, মানুষ। তুমি কাকের ডিম পাড়বে কী করে।’ উত্তেজনায় রাকিবের হাত কাঁপছে। এ প্রথম সে একটা কাকের ডিম দেখছে। হুট করে মনে হলো, অনেক কিছুই এখনো সে প্রথমবারের মতো দেখেনি। ডিমটা ক্রিকেট বলের মতো পুরোপুরি গোল নয়। হাতের তালুতে সাবধানে আঁকড়ে ধরে আছে। ‘চেপে ধোরো না। ফেটে যাবে।’ কথাটা বলতে বলতে ছেলেটা এক দৌড়ে সামনের একটা ঝোপ থেকে একটা লম্বাটে চিকন কী যেন ছিঁড়ে নিল। ফুলের মতোই দেখতে। হাত দিয়ে ঘসে ওটার ফুলগুলো ফেলে কেবল কাণ্ডটা রাখলো। ঝটপট একটা গিট্টুও দিল। রাকিব ভাবছে, ছেলেটা এতো কিছু জানে কী করে। একই গাছ থেকে আরেকটা ডগা ছিঁড়লো। সেই ...

বনরুটির মা

কিশোর গল্প, জাদু-বাস্তবতা
ধ্রুব নীলের গল্প একটা ছিল ছোট বনরুটি। সবে মাত্র দোকানে এসেছে। এক রাতে আকাশে তাকিয়ে দেখে কত্ত বড় একটা বনরুটি। কিন্তু সেই বনরুটির মুখ গোমড়া। ওটা কি আমার মা? আমি নেই বলে মায়ের মন খারাপ? বনরুটি ঠিক করল, মায়ের কাছে যাবে। সুযোগ পেয়ে একদিন বনরুটি দিল লাফ। দোকান থেকে বের হয়ে গড়িয়ে চলল। গড়াতে গড়াতে শহরের রাস্তায় এসে পড়ল। আরে রাস্তায় এত বনরুটি! ঘর ঘর শব্দ করে সাঁই সাঁই করে ছুটছে ওরা। সেগুলোর ওপর আবার মানুষ বসেও থাকে। ছোট্ট বনরুটি গড়াতে গড়াতে গেল এক গ্রামে। সেখানে একটা গোলগাল জিনিস। পানিতে চুপচাপ বসে আছে। ‘ও ভাই, তুমি কি পানিরুটি?’ গোলগাল জিনিসটা বলল, ‘আমি রুটি না। পদ্মফুলের পাতা।’ রুটি গড়াতে গড়াতে গেল আরেক গ্রামে। এ পথে যায় ও পথে যায়। সামনে দেখে গোলগাল কী যেন একটা। রুটি ভাবলো, এ আবার কোন রুটি? সামনে সরু মাঝে গোল। পেছনে একটা লেজও আছে। ছোট্ট রুটিকে দেখে ফ...
কুসুমপুরে সিন্ডারেলা

কুসুমপুরে সিন্ডারেলা

কিশোর গল্প
খাওয়া শেষে ভাবতে বসল দু’জন। রিন্টু গভীর মনযোগ দিয়ে ভাবছে। সিন্ডারেলা একটু পরপর ফুঁপিয়ে উঠছে। রূপকথার দেশে ফেরার কোনো উপায় জানা নেই তার।‘পাইছি! কিউরেকা! না না ইউরেকা!’তড়াক করে লাফিয়ে উঠলো রিন্টু। সিন্ডারেলার চোখও খুশিতে চকচক করে উঠলো। ‘শোনো, রূপকথার গল্প তো আমাদের লেখকরা লেখে। তাদের কাছে গেলেই তো হয়! তারা তোমাকে নিয়ে একটা গল্প লিখলেই তো তুমি ফিরে যাবে!’ সিন্ডারেলা আরেকটু হলে খুশিতে কেঁদেই ফেলত।‘ইশশ.. দারুণ বুদ্ধি তোমার। থ্যাংক ইউ। কিন্তু..। কিন্তু লেখক পাবে কোথায়?’‘চিন্তা নাই! আমাদের সাজু ভাই আছে। কবিতা টবিতা লেখে। উনি গল্প লিখতে পারে। আমাদেরকে অনেক অনেক গল্প শোনায়। এক কাজ কর, তোমাকে দেখলে গ্রামের লোকজন ভিড় করতে পারে। তুমি বাড়ি চলে যাও, আমি সাজু ভাইকে খুঁজি।’সন্ধ্যে হয়ে গেছে। রিন্টুর মা সিন্ডারেলাকে ভাপা পিঠা খেতে দিয়েছেন। সম্ভবত বিদেশি রূপকথার গল্পে এ পিঠার কথা কেউ লেখেনি। আর এ জন্য...

ঝড়, একটি মেয়ে ও বিরিন্তা ফুল

কিশোর গল্প
বদরাগী হেডমাস্টারের মতো প্রচণ্ড ঝড়টা একটু পরই তেড়ে আসবে। মেঠো পথটার ওপর পড়ে থাকা পাতলা পলিথিন আর কাগজের ঠোঙাগুলো দুষ্টু ছাত্রদের মতো পড়িমড়ি করে পালাচ্ছে। কেউ কেউ আবার আকাশে উড়ে চলে গেল। দিন দুপুরের আকাশ কাঁপিয়ে কালবৈশাখির কাজল কালো মেঘ। জানালা দিয়ে অনেক্ষণ ধরে বাতাসের নাচন দেখছে অন্তু। গ্রামের লোকজন এদিক সেদিক ছুটে চলে গেছে অনেক আগেই। লিকলিকে এক চাষীর গামছাটা সাপের ফণার মতো লকলক করছে বাতাসে। ধুলাউড়ি নামের গ্রামটায় আজ সত্যি সত্যি ভীষণ ধুলো উড়ছে।ঝড়টা একেবারেই আলাদা। এত বাতাস আর কালো মেঘ আগে দেখেনি। মুখে হঠাৎ হঠাৎ ঠাণ্ডা বাতাসের ঝাপটা লাগছে। গায়ে জ্যাকেট থাকার পরও শীতে কেঁপে কেঁপে উঠছে আট বছরের অন্তু।চোখের সামনে মড়মড় করে আম গাছের ডাল ভাঙলো। উড়ে গিয়ে সোজা পড়লো মেঠো রাস্তার পাশে ডোবার মতো দেখতে ঝোপঝাড়ে ভরা পুকুরটার গায়ে। তির তির করে কাঁপতে থাকা কচুরিপানার ফুলগুলো হুড়মুড় করে জায়গা করে দিল ডালটাক...

অন্তু ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড

কিশোর গল্প
‘মিস্টার খরগোশ আমি আবারো বলছি ও অ্যালিস নয়!’ ‘ইয়ে স্যার, তা ঠিক। কিন্তু..।’ ‘কিসের কিন্তু! ও একটা ছেলে আর অ্যালিস একটা মেয়ে! আর অ্যালিসের বাড়ি ইংল্যান্ডে। এর বাড়ি কোথায় কে জানে!’ ‘স্যার.. ওর বাড়ি বাংলাদেশে। আনন্দপুর গ্রামে থাকে।’ ‘তো একে এখানে এনেছো কেন! হোয়াই! ইউ ইডিয়ট! আর শোনো স্যার বলবে না, রাজামশাই বলবে।’ ‘স্যার, এটা একটা দীর্ঘ কাহিনী। দীর্ঘ করে বলবো, নাকি সংক্ষেপে?’ ‘সংক্ষেপে বল হাঁদারাম!’ হাল্কা কাশি দেওয়ার চেষ্টা করলেন উইলিয়াম খরগোশ। কিন্তু পারলেন না। গলা দিয়ে ভোঁতা একটা শব্দ বের হলো। হড়বড় করে দাড়ি কমা বাদ দিয়ে বলতে শুরু করলেন। ‘স্যার আমি ইংল্যান্ডে গিয়েছিলাম কিন্তু অ্যালিসকে অনেক খুঁজেও তার বাড়িতে পাইনি, পরে একটা ম্যাগাজিনের মধ্যে দেখি অ্যালিস এখন অনেক বড় নায়িকা হয়ে গেছে, হলিউডে অভিনয় করে, জনি ডেপের সঙ্গেও নাকি তার একটা সিনেমা...। ‘আমি ...

আজব দেশের ধাঁধার গল্প

কিশোর গল্প
‘ও কি জ্ঞান হারিয়েছে?’‘আরে নাহ, জ্ঞান হারানোর ভাণ করে পড়ে পড়ে ঘুমুচ্ছে। দেখছো না মুখটা কেমন হা করে রেখেছে।’যাকে উদ্দেশ্য করে বলা হল, সে কিন্তু কথাগুলো ঠিকই শুনেছে। কিন্তু চোখ মেলার সাহস হল না তার। কেননা কথাগুলো কোনো মানুষের গলা দিয়ে বের হয়নি। বলছে দুটো পাখি। চোখের ফাঁক দিয়ে ওদের খানিকটা দেখে নিল অন্তু। দেখতে বড় সাইজের তোতার মতো। কিন্তু এতবড় তোতা সে আগে দেখেনি। কমসে কম আড়াই ফুট লম্বা। নীল লেজ, গায়ে হলুদ ছোপ আর গলার দিকটা লাল। পায়ের দিকে তাকাল। নাহ, ধারাল নখ নেই। নির্ভয়ে চোখ খোলা যায়।‘তোমরা কি ব্যাঙ্গমা ব্যাঙ্গমি?’অন্তুর কথা শুনে দুটো পাখিই চুপ। একজন আরেকজনের দিকে প্রশ্নবোধক দৃষ্টিতে তাকাল। উত্তর দিল মেয়ে পাখিটা।‘এমন নাম তো আমরা উইকিপিডিয়াতেও শুনিনি, তা ওই ব্যাঙ্গমা ব্যাঙ্গমির বৈজ্ঞানিক নামটা বলতে পারলে হয়ত চিনতে পারি।’অন্তু বুঝতে পারল বোকামি হয়ে গেছে। উঠে বসার চেষ্টা করল। মাথায় খুব আঘাত পেয়...
সাইকেলটা প্রতিদিন স্কুলে আসে

সাইকেলটা প্রতিদিন স্কুলে আসে

কিশোর গল্প, সায়েন্স ফিকশন
ধ্রুব নীলের কিশোর সায়েন্স ফিকশন গল্প : স্কুলের উত্তরে পরিত্যক্ত একটা ক্লাসরুম। তার পেছনে জলাভূমি। সেখানে ধান চাষ হয়। মাঝে মাঝে বক-মাছরাঙা দেখা যায়। ভবনের ওই কোণাতেই দেয়ালে ঠেস দিয়ে পড়ে থাকে সাইকেলটা। পড়েই থাকে। ওতে চড়ে কে আসে, কেনই বা সেখানে পড়ে থাকে সাইকেলটা, কে জানে! কেউ জানার চেষ্টাও করেনি কোনোদিন। ক্লাস টেনের পপেল ছাড়া।পপেল তার বন্ধু রানাকে বলেছে বিষয়টা। পাত্তাই দিল না।‘পুরানা ফোনিক্স সাইকেল। এ আর এমন কী। এমনি পড়ে আছে।’‘এখানে প্রতিদিন কে রেখে যায়?’‘কেউ রাখে না। আগে থেকেই ছিল বোধহয়।’‘মাঝে মাঝে তো দেখা যায় না।’‘তখন মনে হয় স্কুল বন্ধ থাকে।’রানার বোকামি টাইপ কথা শুনে বিরক্ত হয় পপেল। বলে ‘সাইকেল যদি এমনি এমনি আসে, তার সঙ্গে স্কুল খোলা-বন্ধের কী সম্পর্ক!’‘ও। তা হলে কেউ নিয়ে যায়, আবার রেখে যায়। আমি গেলাম। টিফিন টাইম শেষ হয়ে যাবে। পরে খিদে পেলে ফোনের অ্যাপগুলোকেই খেয়ে ফেলতে পারি।’পপেলের ভাবনা ...

ঘোড়ার ডিম 

কিশোর গল্প
 নকুল শর্ম্মা বুল্টির মা বুল্টিকে মামলেট বানিয়ে দিবে যেই ডিম খানা ফাটালো ওমা এ কী কাণ্ড লাফ দিয়ে বেরিয়ে এলো একটা তরজাজা ছানা।মুরগির ছানা দেখে তো বুল্টির মায়ের চোখ ছানাবড়া। ডিম,হায় রে! ডিম, ডিম নিয়ে ঘটে গেলো আজগুবি সব কাণ্ড কারখানা। বুল্টির মা তখন রেগেমেগে বুল্টির বাবাকে বলছে আর কোনো ডিম পেলে না বুঝি? কী ডিম এনেছো পয়সা দিয়ে বাজার থেকে? বুল্টির বাবা মুখ ভেংচিয়ে বললো আর কোন ডিম আনব,ঘোড়ার ডিম? কথা মুখ থেকে বেরুতে না বেরুতেই বুল্টির ছোট ভাই বলে বসলো আমি ঘোড়ার ডিম খাবো। এই হলো গিয়ে,,, মরার উপর খাড়ার ঘা। ছেলের বায়না ঘোড়ার ডিম তার লাগবেই। কোনোভাবেই ওকে সামলানো যাচ্ছে না।বাবা,শেষ পর্যন্ত বলতে বাধ্য হলো ঘোড়ার ডিম গঞ্জের হাট ছাড়া কোথাও পাওয়া যায় না। ছেলে নাছোড়বান্দা, সে ঘোড়ার ডিম খেতে গঞ্জের হাটেই যাবে।  কী আর করা, যেই কথা সেই কাজ।বাবা ছেলেকে নিয়ে বিকেলে গঞ্জের...

ভূতের গল্প : মাছরাঙা ভূত

কিশোর গল্প
মুহাম্মদ নাসির উদ্দিন সুন্দরপুর গ্রাম। গ্রামের পাশে ছলছলা নদী। নদীর পাশেই স্কুল। বাঁধ দেওয়াতে এবারের বর্ষায় বড় ধরনের ভাঙন নেই। তাই স্কুলটার রক্ষে। এই স্কুলেই পড়ে ফয়েজ। নবম শ্রেণিতে। ঝিলের খানিক দূরেই তার বাড়ি। ছোটবেলা থেকেই দুরন্ত। কেউ তাকে কোথাও ডাকলে মানা নেই। রাত কয়টা বাজলো সেদিকে খেয়াল নেই। দে ছুট। একটা জোড়ালো শখ তার মধ্যে আছে। সেটা হলো মাছ ধরার শখ। বরশি দিয়ে টেঁটা দিয়ে কিংবা পোলো দিয়ে মাছ ধরা তার অন্যরকম শখ। আজ রাতে বৃষ্টি হয়েছে। রাত এগারোটা পর্যন্ত স্যারের কাছে পড়তে এসে আটকে পড়ে যায়। রাত সাড়ে এগারোটায় বাড়ি ফেরে। ঝিলের পাশ দিয়েই ওর যাওয়ার রাস্তা। হাতে টর্চলাইট। হঠাৎ দেখল ঝিলের কিনারে লাফিয়ে উঠছে অনেক মাছ। তেলাপিয়া, কই শিং ইত্যাদি। শরীর থেকে শার্ট খুলে মাছ ভরতে লাগল। অনেক হয়েছে। শার্টে আর জায়গা নেই। ওজনও হয়েছে বেশ। ভালো করে গিট মেরে মাছ কাঁধে ফেলে দ্রুত বা...