Friday, July 4
Shadow

কিশোর গল্প

This section will contain stories for juvenile readers. এই বিভাগে থাকবে কিশোর বয়সীদের গল্প

লেখক মোতাব্বির বনাম অন্তু

কিশোর গল্প
ধ্রুব নীল : ‘ছেলেটার নাম অন্তু। বয়স তের কি চৌদ্দ। কিন্তু ভাব দেখে মনে হবে তেইশ চব্বিশ। এক নামে সবাই চেনে। বখাটে বলেও ডাকে কেউ কেউ। লম্বা একটা লাল শার্ট পরে ঘুরে বেড়ায়। লম্বা শার্টের সঙ্গে মাঝে মাঝে হাফ প্যান্ট পরে। চুল এলোমেলো। সম্ভবত তার মা-বাবা কেউ নেই। আমি তাকে প্রতিদিন দেখি। বিকেলে মাঠের এককোণে একদল টোকাইয়ের সঙ্গে বসে বসে বাদাম খায় সে। গ্রামে এমন কেউ নেই, যাকে সে জ্বালিয়ে মারেনি। তবে তার চোখেমুখে সবসময় একটা কিং.. কিং.. কিং..।’ -       কী লিখসেন এইডা? ওই মিয়া কী লিখসেন এইহানে। -       কিংকর্তব্যবিমূড় হবে ওটা। হেহেহে। মানে কী করবে তা ভেবে না পাওয়াকে বলে কিং..। -       হেইডা কী, খায় না মাতায় পিন্দে। আপনে তো আসলেই একটা কিলিকবাজ। -       কী বাজ? ...
দখলদার কুকুরের গল্প

দখলদার কুকুরের গল্প

কিশোর গল্প
কবির কাঞ্চন : ক'দিন ধরে বনের এককোণে বসে বসে কাঁদছে একটি বিড়াল। সময় যতই গড়াচ্ছে তার কান্নার আওয়াজ ততই বাড়ছে। বিড়ালটির এমন বিলাপ করে কান্না দেখে বনের পশুপাখিদের খুব মায়া হয়। তাদের মধ্য থেকে কেউ কেউ কাছে গিয়ে সান্ত্বনা দিতেও ভুল করে না। কিন্তু বিড়ালের সব ঘটনা জানার পর সবাই যার যার মতো করে আফসোস করে। বিড়ালের জন্য দোয়া করে। তারপর নিজেদের গন্তব্যে চলে যায়। আর বিড়ালটি সকাল দুপুর রাতে শুধু কান্না করে। কিছুদিন যেতে না যেতে বিড়ালটির কান্নার আওয়াজ আরও তীব্রতর হয়ে ওঠে। ইতোমধ্যে বিড়ালটির পাশে দুটি বাচ্চা বিড়াল এসে যোগ হয়। তারাও কান্না করতে থাকে। তাদের দু'জনের গা থেকে অনবরত রক্ত ঝরছে। একদিন সেপথ দিয়ে অন্য একটা বিড়াল যাচ্ছিল। সে পাশের বনে থাকে। এ বনে বেড়াতে এসেছে। স্বজাতিদের একজনের এমন দুরাবস্থা দেখে তার খুব মায়া হলো। সে বিড়াল ও বাচ্চা বিড়ালগুলোর পাশে বসে সমব্যথী হয়ে জিজ...
ছোটন ও কাক

ছোটন ও কাক

কিশোর গল্প
ইমরান চৌধুরী : ছোটন, ছোটন। কেউ যেন ডাকছে তাকে এই ভেবে পেছনে ফিরে তাকাল ছোটন। এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখতে পেল তার পেছনে পেছনে একজন বয়স্ক লোক হেঁটে আসছে। লোকটাকে দেখে তাঁর মুখের দিকে তাকাল ছোটন। না, লোকটা চেনা জানা মনে হচ্ছে না। তবু সালাম দিয়ে জানতে চাইল, আপনি কি আমাকে ডাকছেন? লোকটা ছোটনের মুখের দিকে তাকিয়ে বলল, কই নাতো দাদু! বলে লোকটা হাঁটা শুরু করল। দাদু শব্দটা ছোটনের খুব প্রিয়। হয়তো বা উনি কারও দাদু হবেন। লোকটার সঙ্গে দু-চারটা কথা বলার খুব ইচ্ছে হচ্ছিল তার। কিন্তু সে সুযোগ হলো না। কী আর করা লোকটার পেছনে পেছনে ছোটনও শুরু করল হাঁটা। প্রতিদিন এ সময়ে ছোটন স্কুলে যায়। সে এখানকার নামকরা স্কুল ‘ওয়ান্ডার’ এর প্রভাতী শাখার ৪র্থ শ্রেণির ছাত্র। সকাল ৭-২৫ মিনিটে তাদের ক্লাস। সময়টা মাথায় রেখে সে হাঁটতে থাকে। কিছুটা পথ যাওয়ার পর আবার শুনতে পেল ‘ছোটন ছোটন’ ডাক। আবার পেছনে ফিরে তাকাল ছ...
ব্যাঙের মানিক

ব্যাঙের মানিক

কিশোর গল্প
আমজাদ ইউনুস : আবিদ।  বয়স সবেমাত্র সাত বছর হয়েছে। দূরন্ত ও  চঞ্চল স্বভাবের ছিল।  সারাদিন খেলাধুলায় ব্যস্ত থাকত। লাগামহীন জীবন। কোন কিছুর নির্দিষ্ট সময় নেই। যখন যা খুশি যখন যা ইচ্ছে করত। সারাদিন খেলাধুলা করে সন্ধ্যায় বাড়িতে ফিরত । আম্মু মুখ-হাত ধুয়ে  দিয়ে ঘরে নিয়ে যেতেন । কিছু খেয়ে বাংলা অক্ষরের সাথে একটু একটু পরিচয় হত। কিছুই বুঝত না। যা শিখানো হত তা তোতা পাখির মত মুখস্থ করে নিত । আবিদের পড়ালেখা ভাল্লাগে না। সারাদিন খেলতে ইচ্ছে করে। সুযোগ পেলেই সারাদিম বনবাদাড়ে ঘুরত। ফড়িংয়ের পিছু পিছু দৌড়তে দৌড়তে ক্লান্ত হয়েই সবুজ গাছে একটু জিরিয়ে নিত। ফড়িং মেরে মেরে পিঁপড়াদের দাওয়াত দিত। দল বেধে পিঁপড়া ফড়িং খেতে আসত। আবিদ পিঁপড়ার সারির দিকে থাকিয়ে দেখত। বড্ড মজা পেত।  কত মিল পিঁপড়াদের মাঝে। এক সারিতে সমানভাবে পথ চলে। একটু এদিক সেদিক হয়না। মাঝে মধ্যে ...

নিঃসঙ্গ শালিক 

কিশোর গল্প
ওলি  মুন্সী : ছোট্ট খুকি আয়েশা। বাবা মায়ের খুব আদরের কন্যা।পড়াশোনায় যেমন মনোযোগী তেমনি খেলাধুলায়। আয়েশার খেলার প্রিয় জায়গা হলো বারান্দা আর উঠুন। একাকী কখনো সে বাড়ির বাহিরে খেলতে যায়না। কারণ বাড়ির বাহির বাচ্ছাদের জন্য নিরাপদ নয়।আয়েশাদের বাড়ির চারপাশে বিভিন্ন রকমের গাছ।গাছে গাছে নানান জাতের পাখি সকাল বিকাল মুখরিত করে।পাখিদের রব আয়েশার খুব ভালো লাগে। তাই পাখিদের খুব ভালবাসে। আয়েশা তার বাবা মা'য়ের কাছ থেকে পাখিদের নাম শিখে নেয়।তারা কেমন করে উড়ে, কোথায় যায় কিভাবে খাবার আহরণ করে। পাখির ছানাদের কিভাবে মা পাখিরা আগলে রাখে।আয়েশা তার বাবার ছেলেবেলার একটা গল্প শুনেছে শালিক পাখি নিয়ে।আয়েশার বাবার একটা পোষা শালিক  পাখি ছিল।ডাক দিলে উড়ে এসে হাতের মধ্যে বসে পড়তো।  এমনকি কথাও বলতে পারতো মানুষের মতো করে।  পাখিরা কথা বলতে পারে বাবা? শুধু শালিক পাখি নয় ময়না টিয়ে ওরাও ক...
জিয়ানা ও মহাবিশ্ব

জিয়ানা ও মহাবিশ্ব

কিশোর গল্প
সাগর আহমেদ : জিয়ানা এবার ক্লাস সিক্সে উঠেছে। নতুন বই , নতুন সিলেবাস, নতুন সবকিছু। সে তার নতুন বইগুলো নেড়েচেড়ে দেখছিলো। হঠাৎ তার চোখ আটকে গেল ভূগোল বইয়ের মহাবিশ্ব অধ্যায়ের একটা ছবির দিকে। এমন সময় টোকন মামাকে নিয়ে ওদের বাসায় অপু এলো। অপু জিয়ানার বড় বোন টিয়ানার ক্লাসমেট। সে  তিয়ান ও টিয়ানাকে নিয়ে দুঃসাহসী কিশোর দল গঠন করেছে। নানা দেশে,নানা জায়গায় এডভেঞ্চার করে বেড়ায়।   অপুর টোকন মামা প্রায়ই ওদের  সঙ্গে থাকেন। টোকন মামাকে দেখে জিয়ানা চেঁচিয়ে উঠলো," মামা, মামা, দেখতো আমার ভূগোল বইয়ে এই ঝাড়ুর মতো জিনিসটা কি? এটির মাথার দিকে আবার গোলাকৃতি অগ্নিগোলক।" টোকন মামা ভালো করে দেখে নিয়ে বললেন,"এটাতো ধুমকেতু। মহাকাশে এমন ছোট বড় অনেক কিছু রয়েছে। যেমন আমাদের সৌরজগতের সূর্য ও ৮টি গ্রহ রয়েছে, তেমনি অনেকগুলো সৌরজগত নিয়ে একটি গ্যালাক্সি বা ছায়াপথ ...
জুঁইদের লিচু খাওয়ার গল্প

জুঁইদের লিচু খাওয়ার গল্প

কিশোর গল্প
সাঈদুর রহমান লিটন : জুঁই সবেমাত্র ৪র্থ শ্রেণির ছাত্রী। গ্রামের একটা প্রাইমারি স্কুলে পড়ে। চারপাশে বন জঙ্গলে ভরা। জুঁই কিছুটা চঞ্চল প্রকৃতির মেয়ে। ছোট হলেও গুছিয়ে কথা বলতে পারে। তাই  তার বন্ধুরা তাকে অনুসরণ করে। ও যা বলে তাই করে, ও যা বলে তাই শোনে। বলা যায় জুঁই ৪র্থ শ্রেণির অলিখিত ক্যাপ্টেন । ক্যাপ্টেন্সি করার যথেষ্ট দক্ষতা ওর কাজে কর্মে ফুটে ওঠে।ভারি চটপটে একজন মেয়ে। জুঁইদের স্কুলটার পাশেই একটা লিচু বাগান ।  লাল খয়েরি লিচুতে পুরো বাগান টা রঙিন হয়ে উঠেছে। সবারই লোভ হয় লিচু খেতে। স্কুলে তৃতীয় প্রিয়ডে অর্থাৎ টিফিনের আগের প্রিয়ডে জুঁই সবাইকে নিয়ে ছোট একটা মিটিং করলো যে আজ  রঞ্জু কাকুর লিচু বাগান থেকে লিচু চুরি করে খাবে। ক্লাসে সর্বো মোট তিরিশ জন ছাত্র ছাত্রী তার পঁচিশ জন ই উপস্থিত। জুঁই বলল এক জন ও যেন ক্লাসে না থাকে। সবাই লিচু খেতে যাবো। যেমন ভাবনা...
লালুর খাবার

লালুর খাবার

কিশোর গল্প
কবির কাঞ্চন অমল বাবু স্ত্রী-পুত্রকে সঙ্গে নিয়ে বের হলেন। এমুহূর্তে তাদের লক্ষ্য একটাই-রাত আটটার মধ্যে নাসিরাবাদ কাচ্চি ডাইনে পৌঁছা। গত কয়েকদিন ধরে স্ত্রী-পুত্র তাকে কাচ্চি ডাইনে যাবার জন্য রীতিমতো পাগল করে ছাড়ছিল। আজ অফিস থেকে বাসায় ফিরে এসে দিলীপের মুখের দিকে তাকাতেই সে বাবার কাছে বায়না ধরে,: আব্বু, আমরা কাচ্চি ডাইনে যেতে চাই। এই মাস তো প্রায় শেষ হতে চলেছে। আমাদেরকে কাচ্চি ডাইনে খাওয়াতে নেবে না?অমল বাবু দিলীপকে বুকে জড়িয়ে ধরে বললেন,: অবশ্যই নেবো, বাবা। মন খারাপ করো না। যাও, তোমার আম্মুকে রেডি হতে বলো। আমরা এখনই কাচ্চি ডাইনে যাব। বাবার মুখ থেকে যাবার অনুমতি পেয়ে দিলীপ আনন্দে বাবার গালে চুমু খেয়ে একদৌড়ে মায়ের কাছে ফিরে আসে। পূজা রাণী ছেলেকে এমন আনন্দিত হতে দেখে জিজ্ঞেস করলেন,: কীরে বাবা, তোর আবার কী হয়েছে? তোকে যে খুশি খুশি লাগছে।: আম্মু, তাড়াতাড়ি রেডি হও। আব্বু কাচ্চি ডাইনে যেতে ...
খরগোশের বিয়ে

খরগোশের বিয়ে

কিশোর গল্প
ফারুক আহম্মেদ জীবন ঘন- কুয়াশায় ঘেরা শীতের সকাল। নয়ন আজ মাঠে গেছে ও বাবার সাথে খেতের সিম তুলতে। সিমের বান থেকে সিম তুলছে নয়ন। সেসময় হঠাৎ! ওর সামনে দিয়ে দৌড়ে পালিয়ে গেল একটা খরগোশ। নয়ন খরগোশটাকে ধরার জন্য পিছনে ছুটলো। কিন্তু চোখের পলকেই যেনো মুহুর্তে হারিয়ে গেলো খরগোশটি। খরগোশ খুঁজে না পেয়ে মনটা ভীষণ খারাপ হয়ে গেল নয়নের। সে এদিক-সেদিক খরগোশটির সন্ধান করতে লাগলো।  হঠাৎ! ঝোপঝাড়ের মধ্যে চোখ যেতেই সে ছোট্ট একটা খরগোশ ছানা দেখতে পেল।ছানাটি তার কুচিকুচি দাঁত দিয়ে বেশ আয়েশ করে চোয়াল নেড়ে-নেড়ে মুরুব্বীদের পান চাবানোর মতো কি যেনো চিবিয়ে খাচ্ছে। আর বিড়বিড় করে তাকাচ্ছে নয়নের দিকে। খরগোশ ছানাটিকে দেখে নয়নের চোখে মুখে যেনো মুহুর্তে খুশির ঝলক ফুটে উঠল। সে দেরি না করে একটু আড়ালে গিয়ে। পা-টিপে টিপে চুপি সারে গিয়ে ঝপাৎ করে খরগোশ ছানাটিকে ধরে ফেললো। আনন্দের যেনো শেষ নেই নয...

আকাশের পাখিরা

কিশোর গল্প
আলমগীর কবির  আকাশ পাখি ভালোবাসে।পাখিদের জন্য ওর মনে অনেক মায়া।ওদের বাসায় অনেক পোষা কবুতর আছে। আকাশ একটু অবসর পেলেই ছুটে যায় কবুতরগুলোর কাছে। খাবার দেয়। জল দেয়। গল্প করে সময় কাটায় তাদের সাথে।  কবুতরগুলোও কত সুন্দর। মায়াবী! কিন্তুু কেন এতো ভালোবাসে  সে পাখিদের?  তার গল্প আছে একটা। তখন সে ক্লাস ফোরে পড়ত।বাবাকে বলে দুইটি ঘুঘু পাখি কিনে নিয়েছিল পোষার জন্য। অনেক যত্ন করত সে পাখি দুটির।তবু একটি পাখি এক ঝড়ের রাতে মারা যায়। আকাশের মনে অপরাধ বোধ কাজ করে তারপর থেকে।  অন্য পাখিটিকে সে সেদিনেই মুক্ত করে দিয়েছিল। সেই থেকে পাখিদের প্রতি তার বড় বেশি মায়া।  আকাশ তাদের উঠোনে বসে আছে। উঠোনের পাশে সারি সারি খেজুরের গাছ।খেজুরের রস খেতে বুলবুলি, শালিক পাখিরা ছুটোছুটি করছে। একটু দূরে নারকেল গাছে কাকদের আনাগোনা।  আকাশ মায়ের কাছ থেক...