Saturday, December 13
Shadow

Day: March 20, 2025

লাল ফুল

লাল ফুল

কিশোর গল্প, জাদু-বাস্তবতা
ধ্রুব নীল : সিলিংয়ের দিকে তাকিয়ে এক এক করে বত্রিশ পর্যন্ত গুনে ফেলেছে অন্তু। তবু ঘুম আসার জো নেই। মাকড়সার ঝুলের ভেতর একটা নীল পোকা আটকে আছে। ওটার দিকে তাকিয়ে থাকলেও অন্তু ভাবছে অন্য কিছু। মনে মনে নিজের বয়স হিসেব করলো একবার। তিন হাজার চুয়ান্ন থেকে বাষট্টি সাল। কতো হলো? সাত নাকি আট পেরুলো? মনে মনে ধরে নিল এখন তার বয়স আট। তারমানে এখন তার একটা গোপন কুঠুরী থাকতে পারে। যেমনটা ছিল তার দাদার। দাদার কথা মনে পড়তেই আবার চিন্তা ঘিরে ধরলো অন্তুকে। দাদা মারা গেছেন পাঁচ দিন হলো। কিন্তু অন্তু দাদাকে কখনই ভুলতে পারবে না। দাদা তাকে বিশাল এক দায়িত্ব দিয়ে গেছেন। একটা বাক্স পাহারা দেয়ার দায়িত্ব। ওটা আছে ঘরের পেছনের একটা কড়ই গাছের গোড়ায়। মাটির তলায়। ওটাই এখন অন্তুর গোপন কুঠুরী। তাই অন্য সবার মতো ঘুমানোর আগে শেষবারের মতো গোপন কুঠুরীর সব ঠিকঠাক আছে কিনা তা দেখে আসার তাগিদ অনুভব করলো অন্তু। ...
পিবিজ্ঞানী পিপি

পিবিজ্ঞানী পিপি

কিশোর গল্প
ধ্রুব নীল : মানুষ যেমন নাছোড়বান্দা হয়, পিপি তেমনি নাছোড়পিপড়া। কিছুই ছাড়বে না সে। হাতের কাছে যা পাবে, তা’ই ধরে দেখবে। যদি নতুন একটা কিছু বানানো যায়! গতবছর এভাবে একটা মাটি খোঁড়ার বেলচা আর মোটর জুড়ে দিয়ে বানিয়ে ফেলেছিল আজব এক যন্ত্র। সবাই দারুণ প্রশংসা করেছিল পিপির। যন্ত্রটা দিয়ে এক সেকেন্ডের মধ্যে মাটি খুড়ে ভেতরে ঢুকে যাওয়া যায়। মানুষের পায়ের চাপ থেকে বাঁচার জন্য যন্ত্রটার জুড়ি নেই। যন্ত্রটার জন্য পিপি বছরের সেরা পিবিজ্ঞান পুরস্কার পেয়েছিল। মহল্লার রানী পিঁপড়া তাকে নিজ হাতে চিনির দানা খাইয়ে দিয়েছিলেন। আহা! সেই স্বাদ এখনো ভুলতে পারছে না পিপি। কিন্তু কী করবে, এ বছরে একটা নতুন আবিষ্কারও করতে পারেনি বেচারি। বসে বসে কেবল ভেবেছে আর ভেবেছে। তবে আজকে একেবারে মাথার দুটো শুঁড় বেঁধে নেমে পড়েছে পিপি। নতুন কিছু আবিষ্কার করেই ছাড়বে।সকাল থেকে পিপিকে খুঁজে পাচ্ছে না তার মা চি বেগম। মেয়েটা অল্পবয়সেই ...
অঙ্কপুরের গল্প

অঙ্কপুরের গল্প

কিশোর গল্প
ধ্রুব নীল : মগডালে দুটো পা পেঁচিয়ে উল্টো হয়ে ঝুলে আছে ছোট্টা খোকা শূন্য। তার মারাত্মক মন খারাপ। আজকের ঝগড়াটা একটু একতরফা হয়ে গেছে। এক আর দুইয়ের সঙ্গে আজ একটুও পেরে ওঠেনি সে। দেখতে ছোট বলে এভাবে সবার সামনে অপমান করতে হবে? এক বলে কিনা, ‘তোর তো কোনো মান নেই, একেবারে অর্থহীন। তোর নামের মানে বুঝিস? এক্কেবারে ফাঁকা। ফাঁকা মানে ফক্কা, ফক্কা মানে জিরো, জিরো মানে শূন্য।’ তার সঙ্গে তাল মিলিয়েছে হতচ্ছাড়ি দুই। বেণী দুলিয়ে বলে, ‘তুই যে কেন আছিস তা তুই নিজেও জানিস না। এই আমাকেই দেখ না! সবচে ছোট মৌলিক সংখ্যা আমি, সবাই আদর করে। তুই তো অংকই না।’ মন খারাপ হলেই শূন্য গাছের ডালে পা আটকে উল্টো হয়ে ঝুলে থাকে। একদম স্থির। কেউ বুঝতেই পারে না। আজও তাই ঝুলে আছে। ঝুলতে ঝুলতে শূন্য ভাবছে তার শৈশবের কথা। তাকে অংকপুরে এনে দিয়েছিল আর্যভট্ট নামের এক ভারতীয় গণিতবিদ। তারপর গোটা বিশ্বে সেকি হই চই। তার কারণ...

লেখক মোতাব্বির বনাম অন্তু

কিশোর গল্প
ধ্রুব নীল : ‘ছেলেটার নাম অন্তু। বয়স তের কি চৌদ্দ। কিন্তু ভাব দেখে মনে হবে তেইশ চব্বিশ। এক নামে সবাই চেনে। বখাটে বলেও ডাকে কেউ কেউ। লম্বা একটা লাল শার্ট পরে ঘুরে বেড়ায়। লম্বা শার্টের সঙ্গে মাঝে মাঝে হাফ প্যান্ট পরে। চুল এলোমেলো। সম্ভবত তার মা-বাবা কেউ নেই। আমি তাকে প্রতিদিন দেখি। বিকেলে মাঠের এককোণে একদল টোকাইয়ের সঙ্গে বসে বসে বাদাম খায় সে। গ্রামে এমন কেউ নেই, যাকে সে জ্বালিয়ে মারেনি। তবে তার চোখেমুখে সবসময় একটা কিং.. কিং.. কিং..।’ -       কী লিখসেন এইডা? ওই মিয়া কী লিখসেন এইহানে। -       কিংকর্তব্যবিমূড় হবে ওটা। হেহেহে। মানে কী করবে তা ভেবে না পাওয়াকে বলে কিং..। -       হেইডা কী, খায় না মাতায় পিন্দে। আপনে তো আসলেই একটা কিলিকবাজ। -       কী বাজ? ...